মুসলিম অর্থ হলো আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পনকারী। একজন মুসলিম স্বীয় জীবন ইসলামের বিধান অনুযায়ী পরিচালনা করতে বাধ্য। এজন্য ইসলামী আকীদা ও আমল সম্পর্কে ন্যুনতম জ্ঞান অর্জন করা ফরজ। এই পরিমাণ বিদ্যা অর্জন না করলে ইসলামী বিধান অনুযায়ী স্বীয় জীবন যাপন করা যেমন অসম্ভব, অনুরুপ ঈদগাহ, মাদ্রাসা বা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্য বা সম্পাদক বা সভাপতির দায়িত্ব পালন করাও অসম্ভব।
খলিফা উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহ বলেন যে তোমরা নেতৃত্ব লাভের আগেই জ্ঞান হাসিল করে নাও। আবূ আবদুল্লাহ্ বুখারী বলেন, আর নেতা বানিয়ে দেওয়ার পরও জ্ঞান অর্জন চালিয়ে যাও কেননা সাহাবীগণ বয়োবৃদ্ধকালেও ইলম শিক্ষা করেছেন [ সহীহ বুখারী, কিতাবুল ইলম, বাব ইলম ও হিকমতের ক্ষেত্রে সমতুল্য হওয়ার আগ্রহ ]। সহীহ বুখারীর হাদীস নং ৬৪৯৬ তে বর্নিত আছে যে যখন কোন অনুপযুক্ত ব্যক্তির উপর কোন কাজের দায়িত্ব দেয়া হয়, তখন তুমি কিয়ামতের অপেক্ষা করবে। খলিফা উমর ইবনে আব্দুল আযীয বলেন, যে ব্যক্তি ইলম ছাড়া আমল করবে, সে সঠিকভাবে কাজ সম্পাদনের পরিবর্তে ধ্বংস করবে তার চেয়ে বেশি [ তারীখে তাবারী, খন্ড নং ৬, পৃষ্ঠা নং ৫৭২ ]। শিক্ষক, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, চাষী সকলেই সমাজ পরিচালনার জন্য যোগ্য। কিন্তু তাকে অবশ্যই উল্লেখিত ফারজে আইন শিক্ষার অধিকারী হতে হবে। কিন্তু বর্তমানে এমন লোকজন নেতৃত্বে আছেন যারা ফারযে আইন বিদ্যার্জন তো দূরের কথা, কালেমা তৈয়বা শুদ্ধ ভাবে পাঠ করতে কিংবা ফরয গোসল কিভাবে করতে হয় জানেন না। ফলতঃ তারা সর্বদা অপবিত্রই থাকেন। কেউ প্রতিদিন দাড়ি কাটার মত হারাম কাজ করেন। বহু স্থানে সভা বিসমিল্লাহ , হামদ ও দরুদ ছাড়াই সম্পন্ন হয় । অধিকাংশ সম্পাদক, সভাপতি বা সদস্যবর্গ মাখরাজ ও তাজবীদের সঙ্গে কুরআন পাঠের গুরুত্ব সম্পর্কে অসচেতন। তাঁদেরকে সংশোধনের অনুরোধ করলে তাঁরা ক্ষুব্ধ হন। কেউ কেউ এমন মন্তব্যও করেন যে, এগুলো ছোটখাটো বিষয়। অনেকে এর চেয়েও গর্হিত মন্তব্য করেন। একবারও জানার চেস্টা করেন না যে, এর ফলে ইমান নিরাপদ থাকল নাকি নস্ট হয়ে গেল!
বর্তমান প্রেক্ষাপটে সর্বাধিক জরুরী হল, যদি কোন সমাজে কোন আলেম বা ফারযে আইন জ্ঞানার্জন কারী ব্যক্তি থাকেন তাহলে তাকে এই কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। যদি না থাকেন তাহলে সমাজের যোগ্য ইমাম সাহেবকে কমিটিতে সংযুক্ত করতে হবে । রাসূল পাক বলেছেন, কোনো গোত্র যদি সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ ছেড়ে দেয় তাহলে তাদের আমল ও দু‘আ কবূল করা হয় না [ মিজানুল এ’তেদাল, হাদীস নং ৪৭৭৮ ]। নিঃসন্দেহে এ কাজে আলেম ও ইমাম সাহেবগণই সর্বাধিক সক্রিয়। একই সঙ্গে কমিটির সদস্যদেরকে ফারযে আইন শিক্ষা অর্জন করে নিতে হবে। নতূবা সমাজের সকলেই কঠোর গোনাহগার থাকবেন। আল্লাহ পাক আমাদের সকলকে আদর্শ সমাজ গঠনের তাওফিক দান করুন । আমীন !